ওজন বাড়ানোর কার্যকরী উপায়।

 

 

অতিরিক  ওজন যেমন বিভিন্ন স্বাস্থ্য ঝুঁকি বাড়ায়।,তেমনি স্বাভাবিকের চেয়ে কম হলে সেটিও কারণ হতে পারে। সুষম খাদ্যাভাস মানা নিয়মিত  ব্যায়াম  করা ওজন বাড়ানোর জন্য আবশ্যক। এখানে ওজন বারে কোন খাবারে,  ওজন বৃদ্ধির ব্যায়ামগুলো কি, ওজন বৃদ্ধির জন্য কোন কোন বিষয়গুলো নিয়ে  সতর্ক থাকতে হবে-তা নিয়ে আলোচনা করা হবে।

সূচিপত্র

১.ডায়েট চার্ট

২.ব্যায়াম

৩.সতর্কতা

ওজন বাড়ানোর ডায়েট চার্ট 

ওজন বাড়ানোর ডায়েটে সকালে নাস্তা, দুপুরের খাবার ও রাতের খাবার হিসেবে কোন খাবারগুলো খাওয়া যেতে পারে।

সকালের নাস্তা 

ওজন বাড়ানোর জন্য সকালে নাস্তা যে খাবারগুলো যোগ করতে পারেন রয়েছে দুধ  কলা, ডিম ও খেজুর।

দুধ :শরীরের প্রয়োজনীয় প্রায় সব ধরনের পুষ্টি উপাদান দুটি পাওয়া যায়। ক্যালসিয়াম এবং ভিটামিন বি১২ রয়েছে। ক্যালসিয়াম শরীরের হাড় ও দাঁত মজবুত রাখতে সাহায্য করে, আর ভিটামিন বি -১২ রক্ত তৈরি এবং শক্ত শূন্যতা প্রতিরোধে সাহায্য করে।

কলা :গলায় ভিটামিন বি-৬ আছে,যাপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। এতে যথেষ্ট পরিমাণ ফাইবার আছে যা হজমের সাহায্য করেও হার্টের রোগে ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। এছাড়া করা খুব সহজলভ্য সারা বছরই পাওয়া যায়।

ডিম :ডিমকে প্রাকৃতিক মাল্টি ভিটামিন বলা হয়।এর কারণ এতে বিভিন্ন ভিটামিন ও মিনারেল থাকে। ডিমে থাকা ভিটামিন এ চোখের জন্য ভালো। ভিটামিন বি ২ ত্বককে সুস্থ ও সুন্দর রাখে। ডিমের জিংক নামের মিনারেল থাকে যা দেহের রোগ প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তাছাড়া ডিম আরও অনেক ভিটামিন ও মিনারের সমৃদ্ধ।

খেজুর :এটা একটা অসাধারণ পুষ্টিকর ফল। এত ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম থাকে। যা দাঁত ও হাড়ের জন্য খুব ভালো। এছাড়া এতে আয়রন ও ফলিক  এসিড আছে যা রক্ত তৈরিতে সাহায্য করে। খেজুরের ফাইবার বা আঁশ থাকে। ফাইবার হজমের সাহায্য করে, কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে, হার্টের রোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। সকালে কয়েকটা খেজুর খেয়ে নিলে ওজন বাড়ার পাশাপাশি স্বাস্থ্যের উন্নতি হবে।

দুপুরের খাবার

ডাল :ডাল খুবই পুষ্টিকর একটি খাবার। এতে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন ও আমিষ আছে। মুরগি, গরু ও খাসির মাংস থেকে যেমন প্রোটিন পাওয়া যায় ডাল থেকেও তেমন প্রোটিন পাওয়া যায়। কিন্তু গরু ও খাসির মাংসের কিছু ক্ষতিকর চর্বি থাকে, ডালের ক্ষেত্রে সেই ঝুঁকি  নেই। এ ছাড়া আইরন, পটাশিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ সহ বিভিন্ন ধরনের পুষ্টিকর উপাদান রয়েছে।

টক দই :দুপুরের খাবার শেষে একবাটি টক দই খেতে পারেন।টক দই দুধ দিয়ে বানানো, তাই এতে দুধের পুষ্টিগুণ থাকে। টক দই খাওয়ার মাধ্যমে পেটের ভেতরের উপকারিতা অনুজীব গুলোর মত  আরো অনেকগুলো উপকারী জীবাণু দেহে যোগ করতে পারে।

মুরগির মাংস :দুপুরের খাবারের মুরগির মাংস রাখা যায়।সাধারণত যদি এক টুকরো খাবার অভ্যাস থাকে তাহলে ওজন বাড়াতে দুই টুকরো করে খাওয়ার চেষ্টা করুন। অনেকে গরু খাসির মাংস বেশি করে খাওয়ার পরামর্শ দিতে পারে, তবে এ ব্যাপারে সতর্ক থাকবেন। গরু খাসির মাংস খেয়ে ওজন বাড়ানোর সম্ভব হলেও এগুলো অস্বাস্থ্যকর চর্বির কারণে নানা ধরনের স্বাস্থ্য ঝুঁকি হতে পারে। তাই ওজন বাড়ানোর সময় এগুলো পরিমাণে খাওয়া ভালো।

রাতের খাবার 

দুপুরের জন্য যেসব খাবার উল্লেখ করা হয়েছে, ওজন বৃদ্ধির জন্য  সেগুলো  রাতের খাবার সময়ও প্রযোজ্য। ব্যস্ততার কারণে যদি কোন খাবার বাদ পড়ে যায় তবে তাড়াতাড়ি খাবার যোগ করে নেয়া যেতে পারে।

হালকা নাস্তা 

বাদাম, বিভিন্ন ধরনের বীজ ও কিসমিস।

ওজন বাড়ানোর জন্য একটা খুব ভালো নাস্তা হচ্ছে বাদাম।চেনা বাদাম, কাঠ বাদাম, কাজুবাদাম ও পেস্তা বাদাম। সুবিধার মতো যে কোন ধরনের বাদাম খাওয়া যেতে পারে। বাদামে আছে স্বাস্থ্যকর ফ্যাট, অনেক ধরনের মিনারেল, ভিটামিন ও ফাইবার।

বিভিন্ন ধরনের বীজ :ওজন বাড়ানোর একটা উপায় হল খাবারের সাথে বিভিন্ন ধরনের বীজ যুক্ত করা। সম্ভব হলে মিষ্টি কুমড়ার বিচি, সূর্যমুখীর বিচি, তিসির  বিচি, তিলের বিচি  । এগুলো ভাত ভাত দরকার উপর হালকা করে ছিটি খেতে পারেন।

কিসমিস :নাস্তার জন্য বাদামের সাথে কিসমিস মিশিয়ে খেতে পারে। কিসমিস যেহেতু আঙ্গুর ফল শুকিয়ে বানানো হয়।তাই অল্প পরিমাণেই অনেক ভিটামিন আর মিনারেল থাকে। তবে কিসমিস খেলে কারো কারো দাঁতের সমস্যা দেখা দিতে পারে। সেটা দূর করতে শুধু কিসমিস না খেয়ে বাদাম, টকদই  এর সাথে মিশিয়ে খেতে পারে।

ওজন বাড়ানোর খাবার গুলো কি পরিমানে খাবেন? 

প্রথমত আপনি নিয়মিত চা খান উপরে উল্লেখ করা খাবার গুলো তার সাথে যোগ করবেন। নিয়মিত খাবার বাদ দিয়ে শুধু এসব খাবার খেলে ওজন বৃদ্ধি পাবে। দ্বিতীয় তো, এখানে অনেকগুলো খাবারের কথা বলা হয়েছে। এর মধ্যে সবার সবকিছু ভালো নাও লাগতে পারে। আমার বাড়িতে বা হাতের কাছে এগুলো সব সময় নাও থাকতে পারে।নিজের পছন্দের যেকোনো খাবারই খাওয়া যাবে, তবে দৈনিক যেন অতিরিক্ত 300 থেকে 500 ক্যালোরি খাওয়া হয় তা নিশ্চিত করতে হবে।।এর চেয়ে বেশি ক্যালরির খাবার খেলে দ্রুত ওজন বাড়বে ঠিকই, তবে ধীর গতিতে  ওজন বাড়ানোর উত্তর। দ্রুত ওজন বাড়ালে শরীরে অতিরিক্ত চর্বি জমা সম্ভাবনা থাকে।

ওজন বৃদ্ধির ব্যায়াম 

ওজন বাড়াতে খুব ভালো ব্যায়াম হচ্ছে  স্টে্্রংথ ট্রেনিং। এ ধরনের ব্যায়াম শরীরের মাংসপেশী  বাড়াতে সাহায্য করে । তবে এর জন্য জিমে যাওয়ার প্রয়োজন নেই। ঘরে বসে কোন যন্ত্র বা ব্যায়ামের উপকরণের  সাহায্য ছাড়া এ ধরনের ব্যায়াম শুরু করা যায়।

1.pushup

2.pullup

3.plank

4.squat

গুগলের লিখে খুঁজলে ব্যায়ামের নির্দেশনাযুক্ত এমন অনেক ভিডিও পেয়ে যাবেন। অনেকে ভাবতে পারেন যে ব্যায়াম করলে শরীর থেকে শক্তি ও ক্যালোরি খরচ হয়ে যাচ্ছে তাই ওজন বৃদ্ধির জন্য বোধহয় ব্যায়াম করার দরকার নেই। দুজন বাড়ানোর সময় নিয়মিত ব্যায়াম করা উচিত তাহলে অতিরিক্ত ক্যালরি খাওয়ার ফলে শরীরের শুধু চর্বি জমা সম্ভাবনা কমে আসবে।

ওজন বাড়ানোর পূর্বে কিছু সতর্কতা 

আপনার ওজন বৃদ্ধি দরকার কিনা সেটা বুঝে নিন।যাদের  ওজন স্বাভাবিকের চেয়ে কম তাদের ওজন বাড়িয়ে স্বাভাবিক আমার প্রয়োজন।কারণ স্বাভাবিকের চেয়ে অল্প ওজনের নানাবিধ স্বাস্থ্য সমস্যা হতে পারে। তাই কোন কিছু অধিক ভালো না। খাবারের অভ্যাসে পরিবর্তনগুলো ধীরে ধীরে আনা উচিত।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *